ঢাকা   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

শরীয়তপুরে ডাঃ নাজিয়ার বিরুদ্ধে ভুল অস্ত্রোপচারের অভিযোগ 

গ্রামবাংলা

শরীয়ডপুর থেকে এম এ ওয়াদুদ মিয়া

প্রকাশিত: ২০:২৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আপডেট: ২০:২৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শরীয়তপুরে ডাঃ নাজিয়ার বিরুদ্ধে ভুল অস্ত্রোপচারের অভিযোগ 

 

চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চাঁদসার গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ ছনেট ছৈয়ালের স্ত্রী চৈতী আক্তার (২০) নামের এক প্রসূতি।

আর এই ভুল অস্ত্রোপচারটি করেছেন নুর-জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দা শাহিনুর নাজিয়া এবং ডাঃ প্রসেনজিৎ।  

তাদের বিরুদ্ধে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জনের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ঐ প্রসূতি বাবা ইমাম হোসেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, চৈতী আক্তারের সন্তান প্রসবের জন্য গত ২৮ আগষ্ট দুপুর ১২ টায় শরীয়তপুরের শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত নুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৪ হাজার টাকার চুক্তিতে ডাঃ সৈয়দা শাহিনুর নাজিয়া ওই দিন রাতে চৈতীকে সিজার করেন। সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন চৈতী।

রোগীর অভিযোগ, সিজার চলাকালীন ডাঃ সৈয়দা শাহিনুর নাজিয়া অন্যমনস্ক ছিলেন। যার কারণে সিজারের জায়গা দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। কিন্তু তিনি রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি সিজারের স্থান কোন রকম সেলাই দিয়ে অপারেশান থিয়েটার ত্যাগ করেন। কিন্তু চৈতীর অবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতি হতে থাকে। চৈতী পুরোপুরি সুস্থ্য না হতেই তাকে ৩১ আগস্ট নূর হাসপাতাল থেকে ছারপত্র দিয়ে দেয়া হয়। চৈতী বাড়ি চলে যায়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি চলে গেলে সিজারের স্থান দিয়ে পূণরায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ ব্যাপারে চিকিৎসক নাজিয়াকে অবগত করলে, চিকিৎসক নাজিয়া কোন সমস্যা হবে না বলে রোগীর পরিবারকে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু চৈতীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। শুরু হয় পচন। ৪ সেপ্টেম্বর চৈতীকে পূণরায় নূর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে সিজারের স্থানে ডাঃ প্রসেনজিত রায় পুনরায় অপারেশন করেন। তাতেও কোন লাভ না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। ১০ দিন চিকিৎসা শেষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এখনো সুস্থ হয়নি চৈতী। 

এ ব্যাপারে চৈতীর বাবা ইমাম হোসেন নক্তি অভিযোগ করে বলেন, নূর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আমার মেয়ের যায় যায় অবস্থা। ডাঃ সৈয়দা শাহিনূর নাজিয়ার ভুল অপারেশন এবং এসিস্ট্যান্ট জাকিয়াকে দিয়ে সেলাই করার কারণে সিজারের জায়গা দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। পরে আবার নূর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আবার অপারেশন করার কারণে পচন ধরে যায়। তখন আমরা মেয়ের শরীরে তীব্র ব্যাথা শুরু হয়। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়ি। ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোন গুরুত্ব দেয়নি। চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। নিরুপায় হয়ে আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে আনোয়ার খান মর্ডাণ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসি। সেখানে দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মেয়েকে চিকিৎসার জন্য ধারদেনা করে টাকা যোগার করতে হয়েছে। কিন্তু এখনো আমার মেয়ে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য ডাঃ সৈয়দা শাহিনুর নাজিয়ার মোবাইলে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে নূর জেনারেল হাসপাতালে তার ব্যাক্তিগত চেম্বারে গেলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল হাদী মোহাম্মদ শাহ পরানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন জমা দেননি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

 

শেয়ার বিজনেস24.কম